চলচ্চিত্র : লাপাত্তা লেডিস (নিঁখোজ মহিলা) জনরা : কমেডি-ড্রামা পরিচালক : কিরণ রাও ভাষা: হিন্দি মুক্তিপ্রাপ্ত : ২০২৩ ।
উপমহাদেশে নারীদের ঘোমটার প্রচলন তো প্রাচীন, যা আমরা বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের গল্পেও দেখতে পাই। যেমনই প্রচলন ঘোমটার, তেমনই স্বামীর নাম মুখে না নেওয়া, মেয়েদের মোবাইল ব্যবহার না করা, মেয়েদের জোরে কথা না বলা, মেয়েদের একা একা কোথাও না যাওয়া, যৌতুক, বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, নারীর পড়াশোনায় বাঁধা খুবই সাধারণ ও পরিচিত বিষয়। ইদানীংকালে শিক্ষিত ও সচেতন শ্রেণী অনেকটা পরিবর্তন হলেও, গ্রামাঞ্চলে এখনও এমন পরিস্থিতি অনেক পরিবারেই; আর প্রত্যন্ত গ্রামে তা আরও অনেক বেশি। আবার শিক্ষিত শ্রেণীতেও আছে নিকাবে মুখ বেঁধে রাখার বাড়াবাড়ি, যার নতুন সংস্করণ মাস্ক। লাপাত্তা লেডিস এই পুরো প্রক্রিয়ার মুখে একটা জোরেশোরে মারা থাপ্পড়। কিন্তু দুঃখের বিষয় এটাই যে, আমরা যারা এটা দেখবো, তাদের এটা দেখার গুরুত্ব যতো বেশি, তারচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তাদের দেখা, যারা এটা কখনোই দেখতে পারবেনা।সংযোজন: ধর্মের বিষয়ে জ্ঞান আমার একেবারেই নাই, তবে সীমিত যেটুকু পড়েছি, তাতে আমি সবসময় জানতাম, মেয়েদেরকে বড় ওড়না দিয়ে নিজেদের অবয়বকে এমনভাবে ঢাকতে হয়, যেনো তাদের ফিগার না বোঝা যায়, বিপরীতে মুখটা খোলা রাখতে হয়, যাতে করে সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়েদের চেনা যায়। জানিনা আমার জানা কতোটা ঠিক! কিন্তু বিশেষ করে এই মুখ ঢাকা বা খোলার কথাটা বারবার বলার কারণ, শিক্ষিত পুরুষরাও অনেক আছে, যারা কিনা জোরপূর্বক বউয়ের মুখ বেঁধে রাখতে চায় বা রাখে। আমার কাছে এটাও একধরনের নির্যাতন মনেহয়। শুধুমাত্র যে চেনা অচেনার বিষয়, তাতো নয়! বরং হিজাব ক্যাপ, হিজাব, মাস্ক দীর্ঘসময় পরে থাকা একটা বড়সড় ধরনের পেইন, অসুস্থতার কারণ। আর ঘুরতে গিয়েও যদি আঁটসাঁট হিজাবে মুখ আর মাথা বেঁধে রাখা লাগে, তাহলে ঘোরাঘুরির যে উদ্দেশ্য, মুক্ত হাওয়ায় মাখামাখি তা যেমন ব্যহত হয়, তেমনই রিফ্রেশও লাগেনা ঘোরার পরও। দিনশেষে মেয়েরা এখনও দারুণভাবে নির্যাতিত, পরাধীন। শুধু ধরনটা বদলেছে মাত্র।সবশেষে এটুকুই বলার, পরিবর্তন আসুক। এমন চলচ্চিত্র বারবার হোক। আমাদের ভালো হোক।