আয়াতুল কুরসি পাঠ করলে শয়তান দূরে থাকে এবং ঘর-গৃহস্থালি আল্লাহর হেফাজতে থাকে। হাদিসে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর এবং ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি পাঠ করে, সে সর্বদা আল্লাহর নিরাপত্তার মধ্যে থাকে। এটি মুমিনদের ঈমান বৃদ্ধি এবং আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ নির্ভরতা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম।
আয়াতুল কুরসি আরবি :
اَللهُ لآ إِلهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ، لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَّلاَ نَوْمٌ، لَهُ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ، مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا
خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيْطُوْنَ بِشَيْئٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَآءَ، وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ، وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَ هُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ-
আয়াতুল কুরসির বাংলা উচ্চারণ :
আল্লাহু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কাইয়ুম, লা তা’খুযুহু সিনাতুঁও ওয়ালা নাউম। লাহু মা-ফিসসামা-ওয়া-তি ওয়ামা ফিল আরদ্ব। মান জাল্লাজি ইয়াশফা’উ ইনদাহু ইল্লা বিইজনিহি। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম। ওয়ালা ইয়ুহিতুনা বিশাইইম মিন্ ইলমিহি ইল্লা বিমা- শাআ। ওয়াসি‘আ কুরসিয়্যুহুস সামা-ওয়াতি ওয়াল আরদ্ব। ওয়ালা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা ওয়া হুয়াল আলিয়্যূল আজিম।
আয়াতুল কুরসির অর্থ :
আল্লাহ, তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক ও রক্ষক। তাঁকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করে না। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে, সবই তাঁর। কে এমন আছে যে, তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর কাছে সুপারিশ করতে পারে? তিনি জানেন যা কিছু তাদের সামনে এবং পেছনে রয়েছে। আর তারা তাঁর জ্ঞানের অতি সামান্য অংশও আয়ত্ত করতে পারে না, যদি না তিনি তা চান। তাঁর কুরসি আসমান ও জমিনকে পরিবেষ্টন করে আছে, এবং সেগুলো রক্ষা করা তাঁকে ক্লান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ, মহান।
আয়াতুল কুরসি পড়া মুমিনের জন্য একটি রক্ষাকবচ
একদিন হজরত আবু হুরায়রা (রা.) এক ব্যক্তিকে সদকার মাল চুরি করতে দেখলেন। তিনি তার হাত ধরে বললেন, “আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুল (সা.)–এর কাছে নিয়ে যাব।” তখন ওই ব্যক্তি জানালেন যে তিনি খুবই অভাবী। এই কথা শুনে আবু হুরায়রা (রা.) তাকে ছেড়ে দিলেন।
পরদিন সকালে, রাসুল (সা.) আবু হুরায়রা (রা.)–কে জিজ্ঞাসা করলেন, “গতকাল তোমার অপরাধীকে কী করেছ?” আবু হুরায়রা (রা.) বললেন যে তিনি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। রাসুল (সা.) বললেন, “সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে, সে আবার আসবে।”
পরের রাতে আবু হুরায়রা (রা.) আবার চোরকে ধরলেন। এবারও সেই ব্যক্তি বলল যে সে খুব অভাবী এবং আর কখনো আসবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিল। আবার রাসুল (সা.)-এর কাছে ঘটনা বলার পর তিনি বললেন, “সে আবারও আসবে।”
তৃতীয় রাতে চোর আবার আসল। এবার আবু হুরায়রা (রা.) দৃঢ়ভাবে বললেন, “তোমাকে এবার অবশ্যই রাসুল (সা.)–এর কাছে নিয়ে যাব।” তখন চোর বলল, “আমাকে ছেড়ে দিন। আমি আপনাকে এমন একটি উপদেশ দেব, যা আপনাকে উপকার করবে।” চোর বলল, “যখন ঘুমাতে যাবেন, আয়াতুল কুরসি পড়বেন। এতে আল্লাহ একজন পাহারাদার নিযুক্ত করবেন, যিনি শয়তানকে আপনার কাছ থেকে দূরে রাখবেন।”
পরদিন রাসুল (সা.) ঘটনা শুনে বললেন, “যদিও সে মিথ্যাবাদী, তবে সে সত্য বলেছে।” এরপর রাসুল (সা.) বললেন, “তুমি কি জানো সে কে?” আবু হুরায়রা (রা.) বললেন, “না।” তখন রাসুল (সা.) বললেন, “সে হচ্ছে শয়তান।”