তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ও তাদের ব্যবহার – সারসংক্ষেপ
তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ এমন এক ধরনের মৌল যা বিকিরণ (Radiation) নির্গমন করে ধীরে ধীরে অন্য মৌলে রূপান্তরিত হয়। এদের এই বৈশিষ্ট্যের কারণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নানা ক্ষেত্রে এর বিশেষ প্রয়োগ দেখা যায়। বর্তমানে প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম মিলিয়ে প্রায় তিন হাজারেরও বেশি তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের অনেকগুলোই মানুষের কল্যাণে চিকিৎসা, কৃষি, শিল্প, খাদ্য সংরক্ষণ ও বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ নানা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে।
রসায়ন বিজ্ঞানের ৩য় অধ্যায়ের (পার্ট ৩য়) পদার্থের গঠন নিয়ে আমরা সম্পূর্ণ আলোচনা করেছি। আপনি এই নোট পড়লে আপনাকে গাইড কিনতে হবে না। আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে। আমাদের এই পেইজটি বুকমার্ক করে রাখতে পারেন। পরবর্তী অংশগুলো আপনারা এই সাইট থেকে পড়তে পারবেন। ৩য় অধ্যায়ের (পার্ট ১), ৩য় অধ্যায়ের (পার্ট ২),
চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যবহার
তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ চিকিৎসা বিজ্ঞানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রধানত দুইভাবে এর ব্যবহার দেখা যায়— রোগ নির্ণয়ে এবং রোগ নিরাময়ে।
রোগ নির্ণয়ে, রেডিওআইসোটোপের সাহায্যে শরীরের অভ্যন্তরীণ অংশের ছবি তোলা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, টেকনেশিয়াম-৯৯ (Technetium-99m) নামক তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ শরীরে প্রবেশ করানো হলে তা নির্দিষ্ট অঙ্গে জমা হয় এবং গামা ক্যামেরার মাধ্যমে সেই অঙ্গের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা যায়। এভাবে চিকিৎসকরা হৃদপিণ্ড, কিডনি বা অন্যান্য অঙ্গের কার্যকারিতা নির্ভুলভাবে জানতে পারেন। টেকনেশিয়াম-৯৯-এর অর্ধজীবন মাত্র ছয় ঘণ্টা, তাই এটি ব্যবহারের পর দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং শরীরে কোনো ক্ষতি করে না।
রোগ নিরাময়ে, বিশেষত ক্যান্সার চিকিৎসায় তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ভূমিকা অত্যন্ত কার্যকর। আয়োডিন-১৩১ (I-131) ব্যবহৃত হয় থাইরয়েড গ্রন্থির ক্যান্সার ও অতিসক্রিয়তা নিরাময়ে। আবার কোবাল্ট-৬০ (Co-60) দ্বারা ক্যান্সারের টিউমারে বিকিরণ প্রয়োগ করে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা হয়। এছাড়াও ফসফরাস-৩২ (P-32) ব্যবহার করা হয় লিউকেমিয়া বা রক্তের ক্যান্সার নিরাময়ে। ফলে বলা যায়, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ এক অপরিহার্য উপাদান।
কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার
কৃষিক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ব্যবহার ফসল উৎপাদন ও মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
১. ফসলের পুষ্টিতে:
মাটিতে থাকা পুষ্টি উপাদানের গতিবিধি ও শোষণ ক্ষমতা নির্ধারণে তেজস্ক্রিয় নাইট্রোজেন বা ফসফরাস আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, কোন সারের প্রয়োগে ফসল সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়। এতে সার ব্যবহারের অপচয় কমে এবং কৃষক অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়।
২. ক্ষতিকারক পোকার দমন:
রেডিওআইসোটোপ ব্যবহার করে পোকামাকড়ের প্রজনন নিয়ন্ত্রণ করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, পুরুষ পোকাকে গামা বিকিরণ দিয়ে বন্ধ্যা করা হয়, পরে তাদের মাঠে ছেড়ে দিলে তারা ডিম দিলেও তা ফুটে না। এর ফলে পোকামাকড়ের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পায় এবং রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার কমে যায়। এটি একটি পরিবেশবান্ধব ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান।
৩. ফসলের মানোন্নয়ন:
বিভিন্ন বিকিরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফসলের জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে উন্নত মানের জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব। এতে ফসল রোগপ্রতিরোধী, দ্রুত ফলনশীল ও অধিক পুষ্টিকর হয়। বাংলাদেশেও তেজস্ক্রিয় প্রযুক্তির মাধ্যমে বেশ কিছু উচ্চফলনশীল ধান, গম ও পাটের জাত উদ্ভাবিত হয়েছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার
তেজস্ক্রিয় পদার্থের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার হলো বিদ্যুৎ উৎপাদন। ইউরেনিয়াম-২৩৫ ও প্লুটোনিয়াম-২৩৯-এর নিউক্লিয়ার বিভাজনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করা হয়, যা বিদ্যুৎ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এই প্রক্রিয়াকে নিউক্লিয়ার ফিশন বলা হয়। বাংলাদেশেও পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার উদাহরণ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে স্বল্প পরিমাণ জ্বালানিতে বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করা যায়, যা অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক।
তেজস্ক্রিয়তার ক্ষতিকর প্রভাব
তেজস্ক্রিয় বিকিরণ যেমন উপকারী, তেমনি অসতর্ক ব্যবহারে এটি ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত বিকিরণ শরীরের কোষ ধ্বংস করে, ত্বকের ক্যান্সার, জিনগত পরিবর্তন বা জন্মগত ত্রুটি ঘটাতে পারে। ১৯৮৬ সালে ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক দুর্ঘটনা এর ভয়াবহ উদাহরণ, যেখানে বিপুল প্রাণহানি ও পরিবেশ দূষণ ঘটে। তাই তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহারে সবসময় কঠোর নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা প্রয়োজন।
রসায়ন (সৃজনশীল) – ২০২৫ সালের প্রশ্নপত্র উত্তর
🧪 তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ও তাদের ব্যবহার – MCQ (২০টি)
১. তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ কী?
ক) এমন মৌল যা আলো বিকিরণ করে
খ) এমন মৌল যা বিকিরণ নির্গমন করে অন্য মৌলে রূপ নেয়
গ) এমন মৌল যা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে
ঘ) এমন মৌল যা চৌম্বকীয় শক্তি সৃষ্টি করে
✅ উত্তর: খ
২. বর্তমানে মোট কত ধরনের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ চিহ্নিত হয়েছে?
ক) প্রায় ৩০০
খ) প্রায় ১০০০
গ) প্রায় ৩০০০
ঘ) প্রায় ১০,০০০
✅ উত্তর: গ
৩. তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ব্যবহার কোন কোন ক্ষেত্রে বেশি?
ক) চিকিৎসা, কৃষি, শিল্প
খ) সাহিত্য, সংগীত, শিল্প
গ) ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি
ঘ) ধর্ম, শিক্ষা, ভাষা
✅ উত্তর: ক
৪. রোগ নির্ণয়ে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ হলো—
ক) কোবাল্ট-৬০
খ) আয়োডিন-১৩১
গ) টেকনেশিয়াম-৯৯
ঘ) ফসফরাস-৩২
✅ উত্তর: গ
৫. টেকনেশিয়াম-৯৯ এর অর্ধজীবন কত?
ক) ৬ ঘণ্টা
খ) ২৪ ঘণ্টা
গ) ৬ দিন
ঘ) ১ ঘণ্টা
✅ উত্তর: ক
৬. কোন তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহার করা হয় থাইরয়েড রোগের চিকিৎসায়?
ক) আয়োডিন-১৩১
খ) কোবাল্ট-৬০
গ) টেকনেশিয়াম-৯৯
ঘ) ফসফরাস-৩২
✅ উত্তর: ক
৭. ক্যান্সার চিকিৎসায় কোন তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়?
ক) আয়োডিন-১৩১
খ) কোবাল্ট-৬০
গ) নাইট্রোজেন-১৫
ঘ) কার্বন-১৪
✅ উত্তর: খ
৮. ফসফরাস-৩২ ব্যবহৃত হয়—
ক) ক্যান্সার নিরাময়ে
খ) হাড় শক্ত করতে
গ) রক্তের ক্যান্সার (লিউকেমিয়া) চিকিৎসায়
ঘ) থাইরয়েড রোগে
✅ উত্তর: গ
৯. কৃষিক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ব্যবহার করা হয়—
ক) মাটির উর্বরতা ধ্বংসে
খ) ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে
গ) পশুপালনে
ঘ) বৃষ্টিপাত ঘটাতে
✅ উত্তর: খ
১০. ফসলের পুষ্টি গবেষণায় কোন আইসোটোপ বেশি ব্যবহৃত হয়?
ক) নাইট্রোজেন-১৫
খ) কার্বন-১৪
গ) আয়োডিন-১৩১
ঘ) ইউরেনিয়াম-২৩৫
✅ উত্তর: ক
১১. তেজস্ক্রিয় বিকিরণ দিয়ে পুরুষ পোকাকে বন্ধ্যা করা হয় কেন?
ক) যাতে তারা দ্রুত প্রজনন করে
খ) যাতে ডিম ফুটে না
গ) যাতে তারা ফসল রক্ষা করে
ঘ) যাতে তারা বিকিরণ শোষণ করে
✅ উত্তর: খ
১২. ফসলের নতুন জাত উদ্ভাবনে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য—
ক) ফলন বৃদ্ধি
খ) রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
গ) পুষ্টিমান উন্নয়ন
ঘ) উপরোক্ত সবগুলো
✅ উত্তর: ঘ
১৩. পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় মৌল হলো—
ক) নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন
খ) ইউরেনিয়াম ও প্লুটোনিয়াম
গ) হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম
ঘ) আয়রন ও কোবাল্ট
✅ উত্তর: খ
১৪. পারমাণবিক বিভাজন প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপন্ন হয়, যাকে বলা হয়—
ক) নিউক্লিয়ার ফিউশন
খ) নিউক্লিয়ার ফিশন
গ) ইলেকট্রিক রিয়্যাকশন
ঘ) রাসায়নিক বিক্রিয়া
✅ উত্তর: খ
১৫. বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কোথায় অবস্থিত?
ক) রূপপুর
খ) চট্টগ্রাম
গ) খুলনা
ঘ) বগুড়া
✅ উত্তর: ক
১৬. অতিরিক্ত তেজস্ক্রিয় বিকিরণ শরীরে কী প্রভাব ফেলে?
ক) শরীর ঠান্ডা রাখে
খ) কোষ ধ্বংস করে
গ) পেশী বাড়ায়
ঘ) রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
✅ উত্তর: খ
১৭. চেরনোবিল দুর্ঘটনা কোন দেশে ঘটেছিল?
ক) যুক্তরাষ্ট্র
খ) জাপান
গ) রাশিয়া (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন)
ঘ) ফ্রান্স
✅ উত্তর: গ
১৮. চেরনোবিল দুর্ঘটনা ঘটেছিল কোন সালে?
ক) ১৯৭৬
খ) ১৯৮৬
গ) ১৯৯৬
ঘ) ২০০৬
✅ উত্তর: খ
১৯. তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহারে প্রধান সতর্কতা কী?
ক) দ্রুত ব্যবহার
খ) নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা
গ) উচ্চ তাপমাত্রা ব্যবহার
ঘ) বেশি পরিমাণ বিকিরণ দেওয়া
✅ উত্তর: খ
২০. তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ব্যবহার মানবজীবনে কেমন প্রভাব ফেলে?
ক) শুধু ক্ষতিকর
খ) শুধু উপকারী
গ) উপকারী হলেও অসতর্ক ব্যবহারে ক্ষতিকর
ঘ) কোনো প্রভাব নেই
✅ উত্তর: গ
পদার্থের গঠন (Structure of Matter) রসায়ন বিজ্ঞান ৩য় অধ্যায় এস এস সি 2026
🧠 তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ও তাদের ব্যবহার – ১০টি প্রশ্নোত্তর
১. প্রশ্ন: তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ কী?
উত্তর: এমন মৌল বা পদার্থকে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বলে, যা বিকিরণ (Radiation) নির্গমন করে ধীরে ধীরে অন্য মৌলে রূপান্তরিত হয়। উদাহরণ: ইউরেনিয়াম-২৩৫, আয়োডিন-১৩১।
২. প্রশ্ন: তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের সংখ্যা কত?
উত্তর: বর্তমানে প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম মিলিয়ে প্রায় ৩০০০-এর বেশি তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ চিহ্নিত হয়েছে।
৩. প্রশ্ন: চিকিৎসাক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ব্যবহার কীভাবে করা হয়?
উত্তর: চিকিৎসাক্ষেত্রে এটি দুইভাবে ব্যবহৃত হয় —
(ক) রোগ নির্ণয়ে: টেকনেশিয়াম-৯৯ ব্যবহার করে অভ্যন্তরীণ অঙ্গের ছবি তোলা হয়।
(খ) রোগ নিরাময়ে: কোবাল্ট-৬০ ও আয়োডিন-১৩১ ব্যবহার করে ক্যান্সার ও থাইরয়েড রোগের চিকিৎসা করা হয়।
৪. প্রশ্ন: টেকনেশিয়াম-৯৯ (Technetium-99m)-এর কাজ কী?
উত্তর: এটি শরীরের নির্দিষ্ট অঙ্গে জমা হয়ে সেই স্থানের অবস্থা গামা ক্যামেরার মাধ্যমে প্রদর্শন করে। এর অর্ধজীবন ৬ ঘণ্টা, তাই এটি দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয় ও শরীরের জন্য নিরাপদ।
৫. প্রশ্ন: কোন তেজস্ক্রিয় আইসোটোপটি থাইরয়েড রোগে ব্যবহৃত হয়?
উত্তর: আয়োডিন-১৩১ (I-131) থাইরয়েড গ্রন্থির ক্যান্সার ও অতিসক্রিয়তা চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
৬. প্রশ্ন: কৃষিক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ব্যবহার কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: কৃষিক্ষেত্রে ফসলের পুষ্টি বিশ্লেষণ, পোকা দমন ও উন্নত জাতের ফসল উদ্ভাবনে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহৃত হয়, যা উৎপাদন বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করে।
৭. প্রশ্ন: ফসলের পুষ্টি নির্ধারণে কোন আইসোটোপ ব্যবহৃত হয়?
উত্তর: নাইট্রোজেন-১৫ (N-15) ও ফসফরাস-৩২ (P-32) ব্যবহৃত হয় মাটিতে পুষ্টি উপাদানের শোষণ পরিমাণ নির্ণয়ে।
৮. প্রশ্ন: তেজস্ক্রিয় বিকিরণ দিয়ে কীভাবে পোকামাকড় দমন করা হয়?
উত্তর: পুরুষ পোকাকে বিকিরণ দিয়ে বন্ধ্যা করা হয়। পরে তাদের মাঠে ছেড়ে দিলে তারা ডিম দিলেও তা ফুটে না, ফলে পোকামাকড়ের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যায়।
৯. প্রশ্ন: বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ভূমিকা কী?
উত্তর: ইউরেনিয়াম-২৩৫ ও প্লুটোনিয়াম-২৩৯-এর নিউক্লিয়ার বিভাজনের (fission) মাধ্যমে প্রচুর শক্তি উৎপন্ন হয়, যা পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র এর উদাহরণ।
১০. প্রশ্ন: তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ক্ষতিকর প্রভাব কী কী?
উত্তর: অতিরিক্ত বিকিরণ শরীরের কোষ ধ্বংস করে, ক্যান্সার, জিনগত পরিবর্তন ও জন্মগত ত্রুটি ঘটাতে পারে। যেমন— ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল দুর্ঘটনায় বিপুল প্রাণহানি ও পরিবেশ দূষণ ঘটে।
🧠 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (৪টি)
প্রশ্ন–১:
নীচের অংশটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
রুবি তার চিকিৎসা বিজ্ঞানের বইয়ে পড়েছে যে এক ধরনের তেজস্ক্রিয় পদার্থ শরীরে প্রবেশ করিয়ে গামা ক্যামেরার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যায়। তার চাচার কিডনিতে সমস্যা হওয়ায় ডাক্তার তাকে টেকনেশিয়াম-৯৯ ব্যবহার করে পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন।
ক. তেজস্ক্রিয়তা কী?
খ. তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বলতে কী বোঝায়?
গ. টেকনেশিয়াম-৯৯ কীভাবে রোগ নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়?
ঘ. চিকিৎসাক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহারে সতর্কতা কেন প্রয়োজন?
উত্তরঃ
ক. কোনো মৌল বা পদার্থ বিকিরণ (Radiation) নির্গমন করে অন্য মৌলে রূপান্তরিত হলে তাকে তেজস্ক্রিয়তা বলে।
খ. একই মৌলের এমন সব পরমাণু যাদের নিউট্রনের সংখ্যা ভিন্ন কিন্তু পারমাণবিক সংখ্যা একই, এবং তারা বিকিরণ নির্গমন করে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় — তাদের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বলে।
গ. টেকনেশিয়াম-৯৯ শরীরে প্রবেশ করানো হলে এটি নির্দিষ্ট অঙ্গে জমা হয় এবং গামা রশ্মি নির্গমন করে। গামা ক্যামেরার সাহায্যে সেই অঙ্গের ছবি পাওয়া যায়, যা রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করে।
ঘ. কারণ বিকিরণের মাত্রা বেশি হলে শরীরের কোষ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সঠিক মাত্রায় বিকিরণ ব্যবহার করা জরুরি।
প্রশ্ন–২:
নীচের অংশটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
কৃষক আমিনুল ফসলের উৎপাদন বাড়াতে নতুন এক প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। তিনি শিখেছেন, বিকিরণ প্রয়োগের মাধ্যমে পোকামাকড়ের প্রজনন বন্ধ করা যায় এবং কিছু ক্ষেত্রে উন্নত মানের জাত তৈরি করা সম্ভব।
ক. বিকিরণ কী?
খ. তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের কৃষিক্ষেত্রে দুটি ব্যবহার লেখো।
গ. বিকিরণ দ্বারা কীভাবে পোকামাকড় দমন করা হয়?
ঘ. কৃষিক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহারের সুবিধা ও সতর্কতা ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ
ক. তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকে নির্গত আলফা, বিটা ও গামা রশ্মিকে বিকিরণ বলা হয়।
খ. (i) মাটির পুষ্টি উপাদানের গবেষণায়, (ii) নতুন জাতের ফসল উদ্ভাবনে।
গ. পুরুষ পোকাকে বিকিরণ দিয়ে বন্ধ্যা করা হয়। তারা ডিম দিলেও তা ফুটে না, ফলে পোকামাকড়ের সংখ্যা কমে যায়।
ঘ. সুবিধা: ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি, কীটনাশক ব্যবহার কমে, উন্নত জাত পাওয়া যায়।
সতর্কতা: বিকিরণ সরাসরি শরীরে লাগলে ক্ষতি হতে পারে, তাই নির্দিষ্ট মাত্রায় ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ব্যবহার করতে হয়।
প্রশ্ন–৩:
নীচের অংশটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
বাংলাদেশে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এখানে ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে শক্তি উৎপাদন করা হয়। এতে অল্প জ্বালানিতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব।
ক. আইসোটোপ কী?
খ. পারমাণবিক বিভাজন বলতে কী বোঝায়?
গ. ইউরেনিয়াম-২৩৫ কীভাবে শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়?
ঘ. পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুবিধা ও ঝুঁকি আলোচনা করো।
উত্তরঃ
ক. একই মৌলের বিভিন্ন পরমাণু যাদের প্রোটনের সংখ্যা সমান কিন্তু নিউট্রনের সংখ্যা ভিন্ন, তাদের আইসোটোপ বলে।
খ. ভারী তেজস্ক্রিয় মৌলের নিউক্লিয়াস ভেঙে ছোট ছোট নিউক্লিয়াসে রূপান্তরিত হয়ে প্রচুর শক্তি উৎপন্ন করলে তাকে পারমাণবিক বিভাজন (Nuclear fission) বলে।
গ. ইউরেনিয়াম-২৩৫ এর পরমাণু বিভাজিত হলে প্রচুর তাপ শক্তি উৎপন্ন হয়, যা বাষ্পে রূপান্তরিত হয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে।
ঘ.
সুবিধা: কম জ্বালানিতে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন, পরিবেশবান্ধব।
ঝুঁকি: দুর্ঘটনায় বিকিরণ ছড়িয়ে পরিবেশ ও মানুষের ক্ষতি হতে পারে (যেমন— চেরনোবিল দুর্ঘটনা)।
প্রশ্ন–৪:
নীচের অংশটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের বিকিরণ মানুষের শরীরের জন্য যেমন উপকারী, তেমনি অতিরিক্ত বিকিরণ মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। ১৯৮৬ সালে ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক দুর্ঘটনায় হাজারো প্রাণহানি ঘটে।
ক. তেজস্ক্রিয় বিকিরণের তিন প্রকারের নাম লেখো।
খ. বিকিরণের উপকারী দিক দুটি লেখো।
গ. বিকিরণজনিত ক্ষতিকর প্রভাব ব্যাখ্যা করো।
ঘ. তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপায় আলোচনা করো।
উত্তরঃ
ক. আলফা (α), বিটা (β), ও গামা (γ) বিকিরণ।
খ.
১️⃣ ক্যান্সার চিকিৎসায় কোষ ধ্বংসে ব্যবহৃত হয়।
২️⃣ কৃষিক্ষেত্রে পোকামাকড় দমন ও নতুন জাত উদ্ভাবনে সাহায্য করে।
গ. অতিরিক্ত বিকিরণে কোষ ধ্বংস হয়, ত্বকের ক্যান্সার, জিনগত ত্রুটি ও অকালমৃত্যু ঘটতে পারে।
ঘ. বিকিরণরোধী পোশাক ব্যবহার, নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে বিকিরণ প্রয়োগ, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা এবং বিকিরণ এলাকা নিয়ন্ত্রিত রাখা প্রয়োজন।
🧠 তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ও তাদের ব্যবহার – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (১০টি)
১. প্রশ্ন: আইসোটোপ কী?
উত্তর: একই মৌলের এমন সব পরমাণু যাদের প্রোটনের সংখ্যা সমান কিন্তু নিউট্রনের সংখ্যা ভিন্ন, তাদের আইসোটোপ বলে।
👉 উদাহরণ: হাইড্রোজেনের তিনটি আইসোটোপ – প্রোটিয়াম (¹H), ডিউটেরিয়াম (²H), ট্রাইটিয়াম (³H)।
২. প্রশ্ন: তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: যে সব আইসোটোপ বিকিরণ (radiation) নির্গমন করে ধীরে ধীরে অন্য মৌলে রূপ নেয়, তাদের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বলা হয়।
👉 যেমন: ইউরেনিয়াম-২৩৫, কোবাল্ট-৬০, আয়োডিন-১৩১।
৩. প্রশ্ন: টেকনেশিয়াম-৯৯ কী কাজে ব্যবহৃত হয়?
উত্তর: টেকনেশিয়াম-৯৯ ব্যবহার করা হয় রোগ নির্ণয়ে, বিশেষ করে শরীরের অঙ্গ যেমন কিডনি, লিভার, হার্ট ইত্যাদির অবস্থা পরীক্ষা করার জন্য।
👉 এর অর্ধজীবন ৬ ঘণ্টা, যা একে নিরাপদ করে তোলে।
৪. প্রশ্ন: কোবাল্ট-৬০ এর ব্যবহার কী?
উত্তর: কোবাল্ট-৬০ ব্যবহার করা হয় ক্যান্সার চিকিৎসায়। এটি থেকে নির্গত গামা বিকিরণ ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করে।
৫. প্রশ্ন: আয়োডিন-১৩১ এর ব্যবহার কোথায় হয়?
উত্তর: আয়োডিন-১৩১ ব্যবহার করা হয় থাইরয়েড গ্রন্থির ক্যান্সার ও অতিসক্রিয়তা চিকিৎসায়। এটি থাইরয়েড টিস্যুতে জমে সেখানকার কোষ ধ্বংস করে।
৬. প্রশ্ন: কৃষিক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের দুটি ব্যবহার লেখো।
উত্তর:
১️⃣ মাটিতে সার বা পুষ্টির শোষণ পরিমাণ নির্ধারণে।
২️⃣ ফসলের উন্নত জাত উদ্ভাবনে ও পোকামাকড় দমনে।
৭. প্রশ্ন: তেজস্ক্রিয় বিকিরণ দ্বারা কীভাবে পোকামাকড় দমন করা হয়?
উত্তর: পুরুষ পোকাকে বিকিরণ দিয়ে বন্ধ্যা করা হয়। তারা স্ত্রী পোকাদের সঙ্গে মিলিত হলেও ডিম ফুটে না, ফলে প্রজাতির সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যায়।
৮. প্রশ্ন: পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল নীতি কী?
উত্তর: ভারী তেজস্ক্রিয় মৌল (যেমন ইউরেনিয়াম-২৩৫) বিভাজিত হয়ে প্রচুর তাপ শক্তি উৎপন্ন করে। এই তাপ ব্যবহার করে বাষ্প তৈরি করা হয়, যা টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।
৯. প্রশ্ন: চেরনোবিল দুর্ঘটনা কখন এবং কোথায় ঘটেছিল?
উত্তর: ১৯৮৬ সালে ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুর্ঘটনা ঘটে। এতে বিপুল বিকিরণ ছড়িয়ে বহু প্রাণহানি ও পরিবেশ দূষণ হয়।
১০. প্রশ্ন: তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহারে কী ধরনের সতর্কতা প্রয়োজন?উত্তর:
- নির্ধারিত বিকিরণমাত্রা অতিক্রম না করা।
- বিকিরণরোধী পোশাক ও সরঞ্জাম ব্যবহার করা।
- বিকিরণ এলাকা নিয়ন্ত্রিত ও নিরাপদ রাখা।
- প্রশিক্ষিত ব্যক্তির মাধ্যমে ব্যবহার করা।
✳️ প্রশ্ন–১:
একটি মৌলের পরমাণুর মডেল আঁকার জন্য বলা হলে নবম শ্রেণির ছাত্র ফরিদ নিচের চিত্রটি আঁকল।
![Bohr model of atom diagram shown in image]
(ক) পারমাণবিক সংখ্যা কাকে বলে?
উত্তর:
কোনো মৌলের পরমাণুর কেন্দ্রে থাকা প্রোটনের সংখ্যা বা কেন্দ্রের চারদিকে ঘূর্ণায়মান ইলেকট্রনের সংখ্যা— উভয়কেই পারমাণবিক সংখ্যা (Atomic number) বলে।
👉 চিহ্ন: Z
(খ) 2964X\displaystyle {}_{29}^{64}X2964X এবং 3064Y\displaystyle {}_{30}^{64}Y3064Y পরমাণু দুটি নিউক্লিয়ন সংখ্যা সমান কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা ভিন্ন— ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
দুটি পরমাণুর ভর সংখ্যা (নিউক্লিয়ন সংখ্যা) সমান = ৬৪, কিন্তু প্রোটন সংখ্যা (Z) ভিন্ন— একটির ২৯, অন্যটির ৩০।
অতএব, নিউট্রন সংখ্যা হবে—
- X-এর নিউট্রন সংখ্যা = ৬৪ − ২৯ = ৩৫
- Y-এর নিউট্রন সংখ্যা = ৬৪ − ৩০ = ৩৪
এরা সমান ভরবিশিষ্ট কিন্তু ভিন্ন মৌল, তাই একে সমভরক (Isobar) বলে।
(গ) ফরিদের আঁকা চিত্রটি যে পরমাণু মডেলের সীমাবদ্ধতা নির্দেশ করে, সেই পরমাণু মডেলটি বর্ণনা করো।
উত্তর:
চিত্রটি বোহর (Bohr) পরমাণু মডেলকে নির্দেশ করে।
বোহরের মতে—
- ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের চারদিকে নির্দিষ্ট বৃত্তাকার কক্ষপথে ঘোরে।
- প্রতিটি কক্ষপথের শক্তি নির্দিষ্ট থাকে।
সীমাবদ্ধতা:
এটি কেবল হাইড্রোজেনজাতীয় এক ইলেকট্রনবিশিষ্ট মৌলের জন্য প্রযোজ্য; বহুইলেকট্রন পরমাণুতে এর ব্যাখ্যা সঠিক নয়।
(ঘ) আঁকৃত চিত্র অনুসারে পরমাণু কেন স্থায়ী হবে না— তা আলোচনা করো।
উত্তর:
বোহর মডেল অনুসারে, ইলেকট্রন বৃত্তাকার পথে ঘুরলে ত্বরণের কারণে শক্তি হারিয়ে ফেলবে। শক্তি হারালে ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসে পড়ে যাবে, ফলে পরমাণু ভেঙে যাবে।
কিন্তু বাস্তবে তা ঘটে না, কারণ ইলেকট্রন তরঙ্গ কণিকা— এর শক্তিস্তর নির্দিষ্ট থাকে। তাই আঁকায় দেখা অবস্থায় এটি স্থায়ী নয়।
✳️ প্রশ্ন–২:
A মৌল = 60Co{}^{60}\mathrm{Co}60Co, B মৌল = 32P{}^{32}\mathrm{P}32P, C যৌগ = H2SO4\mathrm{H_2SO_4}H2SO4
(ক) প্রোটিক কাকে বলে?
উত্তর:
যে যৌগ থেকে হাইড্রোজেন আয়ন (H⁺) বিচ্ছিন্ন হতে পারে, তাকে প্রোটিক যৌগ বলে।
👉 উদাহরণ: HCl, H₂SO₄, HNO₃ ইত্যাদি।
(খ) পরমাণুতে কখন বর্ণিল রেখা সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
যখন পরমাণুর ইলেকট্রন উত্তেজিত হয়ে উচ্চ শক্তিস্তর থেকে নিম্ন শক্তিস্তরে ফিরে আসে, তখন শক্তি নির্গত হয়— যা বর্ণিল রেখা (Emission Spectrum) হিসেবে দেখা যায়।
👉 হাইড্রোজেনের স্পেকট্রাম এর উদাহরণ।
(গ) C যৌগের আয়নিক বিভাজন ধরন নির্ণয় করো।
উত্তর:
H2SO4\mathrm{H_2SO_4}H2SO4 একটি দ্বিপ্রোটিক (diprotic) অ্যাসিড। এটি দুই ধাপে আয়নিত হয়ঃ
১️⃣ H2SO4→H++HSO4−\mathrm{H_2SO_4} → \mathrm{H^+} + \mathrm{HSO_4^-}H2SO4→H++HSO4−
২️⃣ HSO4−→H++SO42−\mathrm{HSO_4^-} → \mathrm{H^+} + \mathrm{SO_4^{2-}}HSO4−→H++SO42−
অতএব, এটি দ্বি-ধাপীয় আয়নিক বিভাজন (two-step ionization) সম্পন্ন করে।
(ঘ) A এবং B এর আইসোটোপগুলোর আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
- A মৌল (Cobalt-60): চিকিৎসাক্ষেত্রে ক্যান্সার কোষ ধ্বংসে বিকিরণ থেরাপিতে ব্যবহৃত হয়।
- B মৌল (Phosphorus-32): লিউকেমিয়া (রক্তের ক্যান্সার) চিকিৎসায় এবং কৃষি গবেষণায় ফসফরাস শোষণ নির্ধারণে ব্যবহৃত হয়।
অতএব, উভয় আইসোটোপ মানবজীবনে চিকিৎসা ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
✅ সারসংক্ষেপ:
এই দুটি প্রশ্ন পরমাণুর গঠন, আইসোটোপের প্রয়োগ এবং বিকিরণ-সংক্রান্ত মৌলিক ধারণা যাচাই করে।
এসব প্রশ্ন বোর্ড পরীক্ষায় খুবই Common ও Conceptual— তাই এগুলো ভালোভাবে অনুশীলন করলে পূর্ণ নম্বর পাওয়া সহজ।