জিক্সার বাইক মানেই বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি স্পোর্টি বাইক। সুজুকি কোম্পানির এই মডেলটি ১৫০-১৬০ সিসি সেগমেন্টে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। স্টাইল, শক্তিশালী ইঞ্জিন ও নির্ভরযোগ্য পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে জিক্সার বাইক হয়ে উঠেছে অনেক রাইডারের প্রথম পছন্দ।
আরো পড়ুনঃ পালসার বাইক দাম কত? (Pulsar Bike Price 2025)
এই ব্লগে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো জিক্সার বাইকের ফিচার, দাম, পারফরম্যান্স, বিভিন্ন মডেল এবং কেন এটি আপনার পরবর্তী বাইক হতে পারে।
জিক্সার বাইকের প্রধান ফিচার ও স্পেসিফিকেশন
- ইঞ্জিন: ১৫৪.৯ সিসি, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ৪-স্ট্রোক, এয়ার কুলড SOHC
- শক্তি: ১৪.৬ বিএইচপি @ ৮০০০ RPM
- টর্ক: ১৪ NM @ ৬০০০ RPM
- গিয়ার: ৫-স্পিড গিয়ারবক্স
- মাইলেজ: গড়ে ৪০ কিমি/লিটার
- টপ স্পিড: ১২০–১২৫ কিমি/ঘণ্টা
- ব্রেকিং: সিঙ্গেল চ্যানেল ABS / ডাবল ডিস্ক (মডেলভেদে)
- টায়ার: টিউবলেস, সামনে ১০০/৮০-১৭, পেছনে ১৪০/৬০-১৭
- ওজন: ১৩৫–১৪১ কেজি
- ফুয়েল ট্যাংক: ১২ লিটার
- ডিজাইন: মাস্কুলার লুক, স্পোর্টি গ্রাফিক্স, এলইডি টেইল লাইট
জিক্সার বাইক রাইডিং কম্ফোর্ট ও ডিজাইন
সুজুকি জিক্সার বাইকে রয়েছে টেলিস্কোপিক ফ্রন্ট সাসপেনশন ও রিয়ার মনোশক সাসপেনশন, যা উঁচু-নিচু রাস্তা বা লং রাইডে অনেক বেশি কম্ফোর্ট দেয়। লাইটওয়েট বডি ও মোটা টায়ারের কারণে কর্নারিং ও হ্যান্ডলিং অত্যন্ত সহজ এবং ব্যালান্সড।
জিক্সার বাইকের দাম ও ভ্যারিয়েন্ট (২০২৫)
বাংলাদেশে জিক্সার বাইক বিভিন্ন মডেলে পাওয়া যায়, যার দাম শুরু হয় প্রায় ১,৮৪,৯৫০ টাকা থেকে এবং সর্বোচ্চ ৩,৪৯,৯৫০ টাকা পর্যন্ত। নিচে জনপ্রিয় কিছু মডেল ও তাদের মূল তথ্য দেওয়া হলো:
মডেল | ইঞ্জিন | ফুয়েল সিস্টেম | ABS | পাওয়ার | মাইলেজ | দাম (BDT) |
---|---|---|---|---|---|---|
Gixxer Carb Disc | 150cc | কার্বুরেটর | না | 14.6 BHP | 35 km/l | 237,950 |
Gixxer FI Disc | 150cc | FI | না | 14.6 BHP | 40 km/l | 249,950 |
Gixxer FI ABS | 150cc | FI | আছে | 13.9 BHP | 35 km/l | 279,950 |
Gixxer SF FI ABS | 150cc | FI | আছে | 13.9 BHP | 40 km/l | 349,950 |
Gixxer Monotone | 150cc | কার্বুরেটর | না | 14.6 BHP | 35 km/l | 205,950 |
জিক্সার বাইকের ওয়েট মাল্টিপ্লেট ক্লাচ – এটি কী এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ?
জিক্সার বাইকে ব্যবহৃত হয়েছে ওয়েট মাল্টিপ্লেট ক্লাচ, যেখানে একাধিক ফ্রিকশন প্লেট ইঞ্জিন অয়েলে ভিজে থাকে। এর প্রধান সুবিধাগুলো হলো:
- বেশি টর্ক ট্রান্সমিশন
- দ্রুত ক্লাচ কুলিং ও দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্স
- স্মুথ গিয়ার শিফট ও নরম ক্লাচ লিভার ফিল
- কম শব্দ ও কম ঘর্ষণ
এটি বাইকের পারফরম্যান্স ও রাইডিং এক্সপেরিয়েন্সকে আরো উন্নত করে তোলে।
জিক্সার বাইকে ব্যবহৃত কার্বুরেটর ফুয়েল সিস্টেম
জিক্সার বাইকের কিছু মডেলে এখনও কার্বুরেটর ফুয়েল সিস্টেম ব্যবহৃত হচ্ছে, যা বায়ু ও জ্বালানির নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশ্রণ তৈরি করে ইঞ্জিনে পাঠায়। এর প্রধান সুবিধা:
- সহজলভ্যতা ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম
- ট্র্যাডিশনাল মেকানিক্যাল সেটআপ
তবে যারা আধুনিক ফিচার ও ভালো মাইলেজ চান, তাদের জন্য FI (Fuel Injection) মডেলগুলো উপযুক্ত।
কেন জিক্সার বাইক কিনবেন?
জিক্সার বাইক কেন আপনার পরবর্তী বাইক হতে পারে তার কিছু কারণ নিচে তুলে ধরা হলো:
- শক্তিশালী ইঞ্জিন ও ভালো টর্ক
- স্পোর্টি লুক ও আকর্ষণীয় ডিজাইন
- উন্নত ব্রেকিং সিস্টেম (ABS সহ)
- আধুনিক ক্লাচ ও গিয়ার শিফটিং সিস্টেম
- রিজনেবল দাম ও দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্স
কিছু সীমাবদ্ধতা
যদিও জিক্সার বাইক মোটামুটি পারফেক্ট একটি স্পোর্টি বাইক, কিছু সীমাবদ্ধতা লক্ষ করা যায়:
- কিছু মডেলে সাসপেনশন তুলনামূলক শক্ত হতে পারে
- মাইলেজ কিছু কম, বিশেষ করে শহরের জ্যামে
- কিছু যন্ত্রাংশ সহজে পাওয়া না যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে
উপসংহার
জিক্সার বাইক এমন একটি অপশন যা স্পোর্টি লুক, শক্তিশালী ইঞ্জিন ও ভালো রাইডিং এক্সপেরিয়েন্স খুঁজছেন, তাদের জন্য একদম পারফেক্ট। যদি আপনি বাজেটের মধ্যে একটি ব্র্যান্ডেড ও স্টাইলিশ বাইক খুঁজে থাকেন, তবে সুজুকি জিক্সার হতে পারে আপনার জন্য সেরা পছন্দ।